সাংসদ সিমিন হোসেন রিমের বাবা মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রিপরিষদের প্রধান ছিলেন। তিনি এবং আরও কয়েকজন দেশপ্রেমিকের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের পথে এগিয়ে যায়।
‘ক’একটি পরাধীন ভূখণ্ড। ভাষা ও স্বাধিকার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় নির্বাচিত জনপ্রিয় নেতা স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। স্বাধীন রাষ্ট্রের শাসনকার্য পরিচালনা ও অঞ্চলটিতে অবস্থানরত বিদেশি শত্রুমুক্ত করার জন্য একটি সরকার গঠিত হয় ।
১৯৫৪ সালে পূর্ব বাংলা প্রাদেশিক নির্বাচন এ ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ এর শোচনীয় পরাজয় ঘটে এবং যুক্তফ্রন্ট এর সাফল্য সূচিত হয়। এর কারন গুলো নিচে উল্লেখ করা হলঃ
১। লাহোর প্রস্তাব বিরোধী ভুমিকাঃ লাহোর প্রস্তাব এর ভিত্তিতে ১৯৪৬ সালে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাতে মুসলিম লীগ জয় লাভ করে। লাহোর প্রস্তাবে ভারতের উত্তর-পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চল শতন্ত্র মুসলিম রাষ্ট্র গঠন এর কথা থাকলেও ১৯৪৬ সালে তা সংশোধন করে এক পাকিস্তান গঠন এর সিদ্ধান্ত নিলে পূর্ব বাংলার মানুষের মধ্যে অসন্তুষ্টি দেখা যায়। যা ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগ এর পরাজয়ে প্রভাব বিস্তার করে।
২। দলীয় অন্তরদন্দ ও আদর্শগত কোন্দলঃ পাকিস্তান সৃষ্টির পর মুসলিম লীগ দল কিছু নেতার পকেট সংগঠনে পরিণত হয়। ফলে ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে কোন্দল দেখা দেয়। প্রগতিশীল নেতা ও কর্মীদের মুসলিম লীগ এর প্রতি বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হয় এবং নতুন নতুন প্রতিদন্ধি দল তৈরি হয়। ফলে মুসলিম লীগ সংগঠন হিসেবে দুর্বল হয়ে পরে।
৩। পূর্ব বাংলার স্বার্থের প্রতি উপেক্ষাঃ পূর্ব বাংলার স্বার্থের প্রতি মুসলিম লীগ চরম উপেক্ষা দেখিয়েছিল। পাকিস্তান সৃষ্টি র পর মুসলিম লীগ এর কায়েমি স্বার্থবাদি মহল এর শুরু থেকে ইচ্ছা ছিল পূর্ব বাংলা কে পশ্ছিম পাকিস্তানের উপনিবেশে পরিণত করা। মুসলিম লীগ শাসন আমলে যুক্তফ্রন্ট এর বিরুদ্দে প্রথম থেকেই প্রতিবাদ করে আসছিল । এর ফলে পূর্ব বাংলার মানুষ যুক্তফ্রন্ট এর পক্ষে রায় দেয়।
৪। প্রশাসনিক বার্থতাঃ মুসলিম লীগ শাসন আমলে খাদ্য সংকট, লবন সংকট ও বন্যা সমস্যা এবং পাট কেলেঙ্কারি ফাশ হয়ে যাবার কারনে মানুষ মুসলিম লীগ এর প্রতি খুব্দ হয়ে উঠে। অপরদিকে ২১ দফা কর্মসূচিতে খাদ্য সংকট, লবন সংকট ও বন্যা সমস্যা সমাধানের নিশ্চায়তা প্রদান করে ও মুসলিম লীগ শাসন আমলে দুর্নীতি অনুসন্ধান পরিচালনার ঘোষণা পূর্ব বাংলার জনগন কে উদ্দিপ্ত করে তোলে।
৫। নির্যাতন মূলক পদক্ষেপ গ্রহনঃ মুসলিম লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনকামি ছাত্র -যুব-রাজনৈতিক নেত্রিবিন্দ কে ‘দেশদ্রোহী’ , ‘ ভারতের অনুচর ’ আক্ষায় আখ্যায়িত করে এবং তাদের উপর নির্যাতন চালায়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে এ নির্যাতিত নেতারাই ‘ যুক্তফ্রন্ট’ গঠন করে। এর ফলে পূর্ব বাংলার জনগন নির্বাচনে মুসলিম লীগ এর বিপক্ষে এবং যুক্তফ্রন্ট এর পক্ষে রায় দেয়।
পরিশেষে বলা যায় যে, বিশেষ কতগুলো যুক্তিসঙ্গত কারনে ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ দল ১৯৫৪ সালের পূর্ব বাংলার নির্বাচনে পরাজিত হয়।
১৯৫৮ সালে পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারির প্রেক্ষাপট
১৯৫৬ সালে পাকিস্তানে নব প্রবর্তিত সংবিধান অনুযায়ী সংসদীয় শাসনব্যবস্থার প্রবর্তন করা হয়। এ সংসদীয় শাসনব্যবস্থা কার্যকরী হতে না পাওয়ায় এক অস্থিতিশীল শাসন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ১৯৫৮ সালের এ শাসনতান্ত্রিক অস্থিতিশীলতা লক্ষ্য করে সমকালীন প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মীর্জা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন।
তাই শাসনব্যবস্থায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে সমগ্র পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি করেন এবং সব রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে জেনারেল আইয়ুব খানকে CMLA নিযুক্ত করেন…আরো পড়ুন
Read more